ঢাকা, বুধবার, ০২ অক্টোবর ২০২৪, ১৮ আশ্বিন ১৪৩১ আপডেট : ৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকের অপসারণ চেয়ে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ 

ক্লাস পরীক্ষা স্থগিত

  রাবি সংবাদদাতা

প্রকাশ : ০২ অক্টোবর ২০২৪, ১৮:৫৮

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকের অপসারণ চেয়ে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ 
অর্থ আত্মসাৎসহ নানা অভিযোগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মামুনের অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। ছবি: সংগৃহীত

অর্থ আত্মসাৎসহ নানা অভিযোগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মামুনের অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (২ অক্টোবর) সকাল ১০টায় বিভাগে তালা ঝুলিয়ে দেন তারা। পরে বিভাগের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। এতে করে বিভাগের অন্য ব্যাচের ক্লাস পরীক্ষা স্থগিত হয়ে যায়।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মামুন বিভাগের নারী শিক্ষার্থীদের পোশাক নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করতেন, খোলামেলা পোশাকের দোহাই দিয়ে অশোভন মন্তব্য করতেন, বিভাগের উন্নয়ন তহবিলের অর্থ আত্মসাৎ, বৈষম্যবিরোধী গণবিপ্লবের বিরুদ্ধে কাজ করার জন্য নগদ অর্থের প্রলোভন দেখিয়েছেন। এছাড়া অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা, ফল বিপর্যয় ও পাঠদানে ফাঁকি দেয়া, সেশনজট সৃষ্টিসহ ব্যাপক অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা।

অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক। কোর্সের প্রয়োজনে চুক্তিবদ্ধ হয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে তাকে নিয়ে আসা হয়। তবে চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে থেকে গেছেন বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা।

পোশাক নিয়ে কটুক্তির অভিযোগ এনে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, 'আমাদের প্রথম বর্ষের ক্লাসেই তিনি একদিন আমাকে বলেন,'তুমি তো কালো বোরকা পরেছ, এটায় তো আলোবাতাস ঢুকবে না। তোমার সন্তান তো প্রতিবন্ধী হবে। উনি ক্লাসের সবার সামনে একথা বলেন। যার ফলে বেশকিছুদিন আমি মানসিকভাবে অস্বস্তিতে ছিলাম।'

বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. উমর ফারুক বলেন, 'গত ছয় বছরে উনি আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে ব্যাপক দুর্নীতি করেছেন। এমন একজন দুর্নীতিগ্রস্ত শিক্ষককে আমরা আমাদের বিভাগে চাই না। আমরা চাই তিনি তার আগের ইতিহাস বিভাগে ফিরে যাক।'

বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের আরেক শিক্ষার্থী নওশিন ইসলাম বলেন, 'আমাদের বিভাগের সেশনজট ও অর্থ কেলেঙ্কারির জন্যে অধ্যাপক মামুন দায়ী। এছাড়াও উনি বিভিন্ন সময় নারী শিক্ষার্থীদেরকে নানাভাবে পোশাক নিয়ে হেনস্তা করতেন। এমন একজন শিক্ষককে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের কোন শিক্ষার্থীই চায় না। উপাচার্য বরাবর উনার অব্যাহতি চেয়ে একটা আবেদনপত্র দেয়া হয়েছে। প্রশাসন থেকে আব্দুল্লাহ আল মামুনকে আমাদের বিভাগ থেকে অপসারণ না করা পর্যন্ত আমাদের প্রতিবাদ চলবে।'

সার্বিক বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক মো. শরিফুল ইসলাম জানান, 'আমরা ৩০ সেপ্টেম্বর বিভাগের শিক্ষার্থীদের থেকে একটা লিখিত অভিযোগ পাই। লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে সেদিন আমরা একটা জরুরি একাডেমিক কমিটির সভা ডাকি। পরে আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করি যে বিভাগের স্বার্থে, শৃঙ্খলা রক্ষার্থে যেটা করলে শিক্ষার্থীদের মঙ্গল হয় সেটা যেন করা হয়। এখনও আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দিকে তাকিয়ে আছি। এটার একটা সুষ্ঠু বিচার এবং তদন্ত করে তারা যেটা ভালো মনে করবেন, যেটায় শিক্ষার্থীদের ভালো হবে, তাই করবেন বলে আমরা প্রত্যাশী।'

বাংলাদেশ জার্নাল/এমপি

  • সর্বশেষ
  • পঠিত